বন্ধ্যাত্ব বা Infertility নিয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

বন্ধ্যাত্ব বা Infertility নিয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
প্রশ্নঃ বন্ধ্যাত্ব কি? কখন আমরা বলবো একটি couple বা দম্পতি বন্ধ্যাত্ব সমস্যায় ভুগছেন?
উত্তরঃ WHO বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে——
মহিলা বা স্ত্রীর বয়স ৩৫ বছরের নিচে হলে, কোনো প্রকার জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ছাড়া ১ বছর স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত মেলামেশার পরও যদি কনসিভ বা গর্ভধারণ করতে ব্যর্থ হয়, তবে তাকে বলা হয় বন্ধ্যাত্ব।
স্ত্রীর বয়স ৩৫ বছর বা তার বেশি হলে ৬ মাস কোনো প্রকার জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ছাড়া স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত মেলামেশার পরও যদি কনসিভ করতে ব্যর্থ হয় তবে তাকে বলা হয় বন্ধ্যাত্ব।
প্রশ্নঃ কখন একটি দম্পতি বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিবেন বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাবেন?
উত্তরঃ স্ত্রীর বয়স ৩৫ এর নীচে হলে ১ বছর এবং স্ত্রীর বয়স ৩৫ বছর বা তার বেশি হলে ৬ মাস নিয়মিত মেলামেশার পরও কনসিভ না করলে এর পর পরই একজন বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কী কারণে কনসিভ করতে দেরী হচ্ছে তা সনাক্ত করা উচিত।
তবে ১বছর/৬মাস অপেক্ষা করার বিষয়টি সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। বিশেষ করে যাদের Infertility-র রিস্ক ফ্যাক্টর আছে তাদের ক্ষেত্রে এই ১বছর /৬ মাস অপেক্ষা করার বিষয়টি প্রযোজ্য নয়।
যাদের মাসিক অনিয়মিত, যাদের PCOS বা পলিসিস্টিক ওভারী সিনড্রোম আছে, যাদের ওজন অনেক বেশি, যারা থাইরয়েড এর সমস্যা, ডায়াবেটিস, জরায়ুর টিউমার, Endometriosis, Adenomyosis বা Chronic Pelvic Infection এ ভুগছেন বা যার স্বামীর আগে থেকেই বীর্যে শুক্রাণুর সমস্যা ছিলো, তাদের প্রেগন্যান্সির প্ল্যান করার সাথে সাথেই বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞ বা Infertility Specialist এর পরামর্শ নেয়া উচিত। এদের কিছু পূর্ব প্রস্তুতির বা Pre- conceptional preparation এবং চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। পূর্ব-প্রস্তুতি গ্রহণের মাধ্যমে ‘health status optimize’ করে প্রেগন্যান্সির জন্য চেষ্টা করা উচিত।
বন্ধ্যাত্ব কোনো অভিশাপ বা পাপের ফল নয়। এটি জ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়ার মত একটি রোগ মাত্র। সাময়িকভাবে কোনো কারণে গর্ভধারণে দেরী হওয়া বা বিলম্বিত হওয়া মাত্র। পরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক কারণটি বের করে দ্রুত চিকিৎসা নিলে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞান এখন অনেক এগিয়ে গিয়েছে, বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক কারণ বের করা যাচ্ছে, নানা রকমের চিকিৎসাও চলে এসেছে।
সঠিক সময়ে চিকিৎসা করলে ভালো ফল পাওয়া সম্ভব। ৩০ বছরের পর থেকে মেয়েদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে ডিম্বাণুর সংখ্যা ও গুণগত মান দ্রুত কমতে থাকে, সেই সাথে যোগ হয় জরায়ুর টিউমার, এন্ডোমেট্রিওসিস, পেলভিক ইনফেকশন, ডায়বেটিস, উচ্চরক্তচাপ সহ বিভিন্ন জটিলতা ভর করার আশংকাও। তাছাড়া পুরুষদের বয়স ৪০ পেরিয়ে গেলেও সন্তান জন্মদানের ক্ষমতাও কমতে থাকে।
বেশি দেরীতে চিকিৎসা নিলে সমস্যা জটিলতর আকার ধারণ করে। তাছাড়া বেশী বয়সে সন্তান ধারণ করলে বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
মনে রাখতে হবে, “সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড়”।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *